শাকিল আহমেদ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই রংপুর নগরীর সিটি বাজারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে গুলিবিদ্ধ হন সবজি বিক্রেতা বাবু মিয়া (৬৫)।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে গুলিবিদ্ধ পা ইনফেকশন হয়ে এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডের সেফটিক রুমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন সবজি বিক্রেতা বাবু মিয়া। সবজি বিক্রেতা বাবু মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, বাবা টিভিত দেখি আন্দোলনত যারা গুলি খাইছে সবাক সরকার সহযোগিতা দেছে। হামাকতো বাবা কেউ দেখপারো আইলো না। মুইতো কোন রাজনীতি করো না। গুলি করা দেখি পালবার ধরছিনো দোকান বন্ধ করি। যখনে বাবা দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করি একপা নিচে দিছি তখনে আসি গুলি লাগছে পাওত। বড় ব্যাটা মোর হাসপাতালত নিয়ে আসছিলো।
সেদিন মেলা রোগী আছিলো।ডাক্তারা ইনজেকশন দেছে আর কয়টা ট্যাবলেট দিয়ে কইছিলো আর কিছু লাগবে না। এখনতো বাবা ইনফেকশন হয়ে অসুস্থ হয়ে গেনু। ২ মাস থাকি দোকান খুলবার পাও না। কোন কামাই নাই। দোকানের ক্যাশত ৫,৫০০ টাকা আছিল কে জানি গুলি লাগার পর নিয়া গেইছে।
আহত সবজি বিক্রেতা বাবু মিয়ার ছেলে হামিদুল জানান, নগরীর সিটি বাজারের কৈলাশরঞ্জন স্কুল সংলগ্ন মার্কেটে আব্বা সবজি বিক্রি করতেন । হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনেই রংপুর মেডিক্যালে নিয়ে গিয়েছিলেন তার বাবাকে। প্রায় ১১ টি ছররা গুলি পায়ে লেগেছিলো। পরে ২ টা গুলি বের করে, ডাক্তার বলছিলো কিছু হবে না এমনি ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু কিছুদিন পর গুলিবিদ্ধ পা ইনফেকশন হয়ে যায়। এখনো আমার আব্বার শরীরে থাকা গুলি গুলোর যন্ত্রনায় তিনি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারতেছে না।এ পর্যন্ত প্রায় ৫০,০০০ টাকা খরছ করছি চিকিৎসার জন্য। জামায়াতের এক নেতা আসিয়া কিছু টাকা সহযোগিতা করছে। আর কেউ সহযোগিতা করেনি খোঁজ ও নেয়নি। মেডিকেলের ডাক্তার ঠিকমতো দেখে না। এখানে ভালো করে চিকিৎসা পাচ্ছে না আমার আব্বা। আমি আব্বার সু-চিকিৎসা চাই সরকারের কাছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র বলছে আন্দোলনে আহত এই একজন রোগীই হাসপাতালে ভর্তি আছে। বাকি রোগীরা হাসপাতাল থেকে ব্যবস্থাপত্রে ঔষধপত্র লিখে নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ আঃ মঃ আখতারুজ্জামান বলেন, আন্দোলনে আহত একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। ছররা গুলি অনেক বছর শরীরে থাকলেও সমস্যা হয় নাহ। গুলি বের করলেই ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি আগামীকাল রোগীটির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।