এফএনএস
টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট শেরপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার সবক’টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর বাঁধের অন্তত সাত স্থান ভেঙে নদীর দুই কূল উপচে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর ও নালিতাবাড়ী পৌর এলাকাসহ শ্রীবরদী উপজেলার শতাধিক গ্রাম ডুবে গেছে। এদিকে বন্যার পানিতে ডুবে শেরপুরে তিনজন নিহত হয়েছে। এরা হলেন. নালিতাবাড়ী উপজেলার খলিশাকুড়ি গ্রামের খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী (৬৫) ও ঝিনাইগাতীর উপজেলার সন্ধাকুড়া গ্রামের অজ্ঞাত একজনের পরিচয় জানা যায়নি। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নালিতাবাড়ী থানার ওসি মো. ছানোয়ার হোসেন।
বন্যার পানি উজানে কিছুটা কমতে শুরু করলেও ভাটি এলাকায় আরো অন্তত ৫০ গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এপর্যন্ত ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে।এতে চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছেন লোকজন। বন্যা দুর্গত এলাকায় আটকে পড়াদের উদ্ধার কাজ করেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা। বন্যার্ত এলাকায় খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ। এদিকে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জেলায় ৭ হাজার ৭শ হেক্টর জমির আমন ধান সম্পূর্ণ পানির নীচে এবং ৯ হাজার ৭শ হেক্টর জমির আমন ধানের আবাদ আংশিক পানির নীচে তলিয়ে গেছে। ৬শ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, নালিতাবাড়ীতে হঠাৎ পাহাড়ি ঢলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকার মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঢলের পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ জানা যাবে। আমরা বন্যার্তদের পাশে আছি। তাদের মাঝে জরুরিভিত্তিতে শুকনো খাবার বিতরণসহ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।
এ ব্যাপারে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘শেরপুরের তিন নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হবে।’
কপিরাইট © ২০২৪ (দৈনিক পরিবেশ) সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Leave a Reply