শাকিল আহমেদ
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহ মহিউদ্দিন পীরোত্তর ওয়াকফ এস্টেট এর বিগত সময়ের সাবেক সেক্রেটারি জমশেদ আলী ওয়াকফ প্রশাসনের অনুমোদন ও অনুমোদনবিহীন ১৯৯৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ওয়াকফ এস্টেট পরিচালনা করেন। এসময় জমশেদ আলীর ছত্রছায়ায় ধোপাকোল গ্রামের বাসিন্দা গোলাপ,মোক্তার,মোকছেদ ও আফজাল মাস্টার ওয়াকফ এস্টেটের ধোপাকল মৌজাস্থ ৬৮ শতক জমি দখল করে নেয় এবং ঘরবাড়ি নির্মাণ করেন।
এদিকে ২০২০ সালে ওয়াকফ এস্টেটের জমি লিজ দেওয়ার কথা উঠলে বর্তমান কমিটির সদস্যরা জানতে পারে বিগত ১৪ বছর থেকে অনুমোদিত কোন কমিটি নেই ওয়াকফ এস্টেটের। এরপর ঢাকায় পরিচালনা কমিটির জন্য আবেদন করলে রংপুর ওয়াকফ নিরীক্ষা অফিসার কর্তৃক সুপারিশ করলে গত ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সালে ঢাকা ওয়াকফ প্রশাসক কর্তৃক কমিটি অনুমোদন পাওয়ার পর কার্যক্রম শুরু করলে বর্তমান কমিটির কার্যক্রম বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করে জমশেদ আলী গং।
জমশেদ আলী গংয়ের আবেদন ও আওয়ামীলীগের তৎকালীন উপজেলা নেতাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কমিটি স্থগিত করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রেজাউল কবীর টুটুলকে দায়িত্ব দেয়। এদিকে কমিটির সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান হাইকোর্টে রিট করলে ২৫ মে ২০২৩ সালে হাইকোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশ স্থগিত করে বর্তমান কমিটিকে আইন অনুযায়ী তিন বছরের জন্য বৈধতা প্রদানের আদেশ প্রদান করে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী দায়িত্ব গ্রহণ করে কমিটির সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান ২৮ মে ২০২৩ এ ওয়াকফ এস্টেটের ৬৮ শতক জমি উদ্ধারের জন্য ওয়াকফ প্রশাসক বরাবর আবেদন করলেও আজ অবধি জমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
এবিষয়ে শাহ মহিউদ্দিন পীরোত্তর ওয়াকফ এস্টেট এর সেক্রেটারি হাবিবুর রহমান বলেন,জমশেদ আলী অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ওয়াকফ এস্টেটের সেক্রেটারি পদ দখল করে তার লোকজনকে দিয়ে ওয়াকফ এস্টেটের ৬৮ শতক জমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ ও আম বাগান করেছেন । আমরা দখলকৃত জমি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করতেছি জন্য বর্তমান কমিটির মেয়াদ থাকার সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে চাপ দিয়ে বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে তারা আবার পূর্বের মতো নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি করে ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি আত্মসাৎ এর ষড়যন্ত্র করতেছে।
সরেজমিনে গিয়ে ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি দখল করে বাড়ি নির্মাণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মোঃ গোলাপ হোসেন বলেন, সেসময় মৌখিক কথাবার্তার মাধ্যমে গ্রামবাসীর সম্মতি নিয়ে এইখানে বাড়ি করেছিলাম। অনেকদিন অফিসে ঘুরছি কিন্তু রেজিস্ট্রি করতে পারি নাই। আমি ওয়াকফ এস্টেটকে জমি মৌখিকভাবে বদল দিয়ে এখানে বাড়ি করছি। চাইলেই তো আর এজায়গা ছেড়ে দেয়া যায় নাহ।
রংপুর জেলার ওয়াকফ, পরিদর্শক বলেন, বিষয়টি আমি এখন জানলাম তবে ওয়াকফর জমির দখল করে রাখার কোন এখতিয়ার নেই, বর্তমান কমিটিকে ৬৪,১ ধারায় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ পত্র আবেদন করতে বলেন তিনি, তারপর তদন্ত করে প্রশাসকের আদেশে অতি দ্রুত জমি উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, ওয়াকফ জমি সংক্রান্ত ঝামেলা ছিলো কিন্তু ওয়াকফ জমি দখল করার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না তবে এখন অভিযুক্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।