মমিনুল ইসলাম রিপন রংপুর
বৃহস্পতিবার ( ১ মে) বিকেলে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাববৈঠকির উদ্যোগে গণ অভ্যূত্থান, রাষ্ট্রগঠন ও আমাদের দায় শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি। আলোচনায় আরও অংশ নেন কবি ও রাজনীতিক চিনু কবির, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, ভাববৈঠকির সংগঠক মোহাম্মদ রোমেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়ক এড. রায়হান কবীর, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম। ভাববৈঠকি সঞ্চালনা করেন কনক রহমান।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ আমি মনে করি ৫ আগস্টে তরুণরা আমাদের নতুন বাংলাদেশ দান করেছেন। যতটুকু তারা করতে পেরেছে। যদি তাদের কোন ব্যর্থতা হয়ে থাকে তবে সেটা আমাদের সকলের ব্যর্থতা।
চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ আমরা একটা বিকেন্দ্রীভূত বাংলাদেশ চাই। যেখানে সত্যিকারের গণতন্ত্র থাকবে। যেমন রংপুরবাসির যা প্রয়োজন। তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিবে। একটা কেন্দ্রীয় সরকার থাকবে। একটা শক্তিশালী স্থানীয় সরকার থাকবে। ঢাকা কেন্দ্রিক অল্প কিছু লোক শাসন করবে আর লুন্ঠণ করবে এটা আমরা চলতে দিবো না। উত্তরবঙ্গ থেকে যা যাবে। সেটা এখানেই ফিরে আসতে হবে। গুলশান বনানীতে যেতে পারবে না। বাইরে গিয়ে সেকেন্ড হোম বানাবেন সেটা হবে না।’
চিন্তক ফরহাদ মজহার ,আরও বলেন ‘ আমরা এমন একটা বিকেন্দ্রীকৃত শাসনব্যবস্থা চাই। যেখানে আমরা রাষ্ট্রকে, সরকারকে জবাবদীহী করাতে পারবো। এবং জবাবদিহীতার জন্য প্রত্যেকটা প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি আমাদের হাতে থাকবে। এভাবে আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো।’
চিন্তক ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘ রুহানিয়াত একটি শক্তিশালী বিষয়। এজন্য আমাকে জামায়াত বা হেফাজত মনে করবেন না। জনগন সামস্টিকভাবে যে চেতনার দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে তার নিজের জীবনটা বিষর্জন দিবে বা শাহাদাত বরণ কতে রাজি থাকে। তাহলে তাকে বলে রুহানিয়াত । তার মনের যে ইচ্ছা। সামস্টিক মঙ্গলের জন্য। যে অভিপ্রায়টা ধারণ করে। যেটা সে মনে করেছে। তার সেই অভিপ্রায় জীব ও জীবনের তুলনায় অনেক উর্ধে চলেগেছে। অন্যকিছু তার কাছে তুচ্ছ। এটা হলো রুহানিয়াত।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ কালমার্কস যখন শ্রেণির আলোচনা করেছেন। তখন তিনি বলেছিলেন রাজনতিক কর্তাশক্তি আকারে বিপ্লবের আকারে শ্রমিক শক্তি ভূমিকা পালন করবে। ইতিহাস কিন্তু এটার পক্ষে সায় দেয় নি। শ্রমিকরা বিপ্লবের বড় শক্তি। কিন্তু একক নয়। তারা বড়জোড় ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারে। বিপ্লবের জন্য দরকার পেশাদার বিপ্লবী। পেশাদার বিপ্লব তারা। যারা সামস্টিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য তার তাদের জীবের জীবন বিষর্জন দিবে। কোরবানী দিবে। সেটাতে তারা রাজি’’ থাকে।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ ধর্মের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলা যাবে না। ধর্মকে যদি আমরা ক্রেডিট করতে পারি। তাহলে ধর্মের সার্বজনীন পদ্ধতি তুলে আনতে পারবো। আর তুলে আনার পদ্ধতি হলো রুহানিয়াত। রুহানিয়াত যদি থাকে সমাজে তাহলে সামস্টিক চেতনার বুদ্ধিভিত্তিক সাংস্কৃতি আমরা তৈরি করতে পারবো। আপনার মধ্যে যে আমি বাস করছে এখন। তিনি যখন সায় দেয়। তখন আমি মাথা নাড়ছি। শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুতির আমির সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন হয় তখন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ আমাদের ভাবের মধ্যে। আমাদের দর্শনের মধ্যে। আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে অপূর্ব অপূব খনি ঢূকেছে। এগুলো খনন করে আনাটা জুলাই অভ্যুত্থানের পরে সব থেকে বড় কাজ। এটা খুড়তে হবে। এটা বুঝতে হবে। তখন আমরা বুঝতে পারবো। আমরা সাধারণ করবো। সেজন্য আমাদের রাজনীতি, সাহিত্য, সৃংস্কৃতি, সর্বত্রই আমাদের গভীর পর্যালোচনা দৃষ্টিভঙ্গি এবং হিম্মত অর্জন করতে হবে।
ফরহাদ মজহার বলেন, আমাদের জুলাই বিপ্লবের পরে প্রকলেমশন লাগবে। ডক্টর ইউনুস প্রকলেমেশন না দিলে আমরা নিজেরাই প্রকলেমেশন দিবো। নতুন বাংলাদেশ গড়বো। জুলাই বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। তাহলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। তরুণদেরকে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।