মমিনুল ইসলাম রিপন , রংপুর:
জ্বালানি তেলের বিক্রয় কমিশন ৭ শতাংশ নির্ধারণসহ সাত দফা দাবিতে সারাদেশের মতো রংপুরেও সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট পালন করছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ। এই ধর্মঘটের অংশ হিসেবে দুপুর ২টা পর্যন্ত সকল পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখা হয়েছে, একই সাথে ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহনও স্থগিত রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রোববার সকাল ৬ টা থেকেই রংপুর নগরীর ছালেক পেট্রোল পাম্প, শাপলা পেট্রোল পাম্প, নর্দান পেট্রোল পাম্পসহ সবগুলো পেট্রোল পাম্প বন্ধ। বাস, ট্রাক, মোটর সাইকেল যানবাহন চালকেরা পাম্পে এসেও ফেরত গেছেন তেল না নিয়ে। ৮ ঘন্টার এই ধর্মঘটের কারনে অনেকে আবার পড়েছেন ভোগান্তিতেও। জ্বালানি তেলের পাম্প বন্ধ থাকায় যানবাহন চালকেরা ও মোটরসাইকেল চালকেরা তেল নিতে এসে পাম্প থেকে হতাশ হয়ে ফেরত যাচ্ছেন।
এদিকে তেল পাম্প বন্ধ থাকায় পাড়া মহল্লার খুচড়া তেল বিক্রির দোকানে ভীড় বেড়েছে কয়েকগুন। অনেক দোকানের তেল সকালেই বিক্রি শেষ হয়েছে। কিছু কিছু দোকানে এখনও তেল রয়েছে। খুচড়া তেল নিতে গিয়ে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা যানবাহন চালকদের।
মোটরসাইকেলে জ্বালানি তেল নিতে আসা আজিজুর ইসলাম বলেন, পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে এসে দেখি তেল দিচ্ছে না। কোনো ঘোষণা ছাড়াই পাম্পগুলো বন্ধ করে দিয়েছে মালিকরা। এখন কোথায় তেল পাবো, মোটরসাইকেল নিয়ে দূরে যেতে হবে কাজে। এখন আশেপাশের খোলা তেল নিয়ে যেতে হবে কাজে।
অপর মোটরসাইকেল চালক মানিক বলেন, মোটরসাইকেলে একেবারে তেল নেই। তাই তেল নিতে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। গাড়িতে তেল নেই, তাই ঠেলে নিয়ে আবারও বাসায় ফিরতে হবে।
শাপলা পেট্রোল পাম্পের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম জানান, সারাদেশের মতো আমরা বন্ধ রেখেছি তেল পাম্প। শুধু সিএনজি চালু রয়েছে। যানবাহন চালকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
রংপুর পেট্রোল পাম্প সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জানান, প্রেট্রোল পাম্প কোনও শিল্প নয়; এটা কমিশনভিত্তিক ব্যবসা, যার কারনে বিআরসি, কলকারখানা ও ফায়ার সার্ভিসের কাছ থেকে নেওয়া নিবন্ধন বাতিল, কমিশন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে সারাদেশে একযোগে।
পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাত দফা দাবি গুলো হলো:
১। জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন ৭ শতাংশ করা ও সড়ক জনপথ অধিদপ্তরের ইজারা মাশুল পূর্বের অবস্থানে বহাল রাখা
২। পাম্প সংযোগ সড়কের ইজারা নবায়নের সময় পে-অর্ডারকে নবায়ন বলে গণ্য করা
৩। বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফি এবং নিবন্ধন প্রথা বাতিল
৪। পরিবেশ অধিদপ্তর, বিইআরসি, কলকারখানা পরিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স গ্রহণ প্রথা বাতিল
৫। বিপণন কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ
৬। ট্যাংকলরি চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যুতে জটিলতা দূর করা, সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট প্রদান
৭। অননুমোদিতভাবে ঘর বা খোলা স্থানে তেল বিক্রয় বন্ধ করা।
কপিরাইট © ২০২৪ (দৈনিক পরিবেশ) সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Leave a Reply