উপজেলা প্রতিনিধি (মিঠাপুকুর)
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়িতে হামলা চালোনোর অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.৩০ টার সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এবিষয়ে ভাংনী ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফাহিম মুনতাসীর ওয়াহেদী বাদি হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নে বন্যার্তদের সাহায্যের নামে আল মা আরিজ যুব সংগঠনের ব্যানারে নগদ প্রায় দুই লক্ষ টাকা কালেকশন করে কাগজীপাড়া গ্রামের মোতাকাব্বের হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। কালেকশনের টাকা বন্যার্তদের সহযোগিতায় না পাঠিয়ে টালবাহানার কারণে দ্বন্দ্ব বিবাদ লাগে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে। এই বিষয়টি জানাজানি হলে ইউপি চেয়ারম্যান উক্ত টাকা বন্যার্তদের সহযোগিতায় সরকারি ফান্ডে পাঠাতে বলে।এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভাংনী ইউনিয়নের কাগজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দোলনের ইন্ধনে মোতাকাব্বের হোসেন, রিয়াল মিয়া, নাঈম মিয়া,মোরছালিন মিয়া,এনামুল হক হলুদ, তাজমুল হোসেন, রুকু মিয়া,কোরবান আলী, মানিক মিয়া, হাছিব মিয়া,সজিব মিয়া, লাকাদ মিয়া,সাকিব মিয়া,হামিম মিয়া,গোলাম রব্বানি, সিয়াম মিয়া,মোত্তাকিন মিয়া, রেদোয়ান মিয়া, রোম্মান মিয়া, শহীদ মিয়া, রাতুল মিয়া, শয়ন মিয়া, রাফিন, হাফিজার রহমানসহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জনসহ লাঠি, লোহার রড ও দা নিয়ে সজ্জিত হয়ে চেয়ারম্যানের বসতবাড়িতে অবস্থিত হোমিওপ্যাথিক ফার্মেসীতে প্রবেশ করে দরজা, টেলিভিশন, চেয়ার, টেবিল ভাংচুর করে আনুমানিক ৩৯০০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে ও ক্যাশ টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৮৬,০০০ টাকা বাহির করে নিয়ে যাওয়ার সময় দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্য হত্যা করার হুমকি প্রদান করে।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার পর পুলিশ আসলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই আলতাবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় জানায়,রাত ১ টায় পুলিশের ২ টি গাড়ি আসলেও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার এসআই আলতাব উল্টো দুষ্কৃতকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের ছাত্র সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে বলেন ছাত্ররা শিক্ষকদের কতকিছু করতেছে।তার কোন বিচার নেই। চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলাতো সামান্য ঘটনা। আগামীকাল থানায় আসেন। মীমাংসা করে দেয়া হবে।পুলিশ অফিসারের এমন মন্তব্যে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।এর আগেও বিভিন্ন সময় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ভাংনী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মোতাকাব্বের ছেলেটি নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধীটাকে পুঁজি করে মাঝে মধ্যেই বিধবা ভাতাসহ সমাজকল্যাণ বিভাগের বিভিন্ন কাজ নিয়ে আমার কাছে তদবির করতে আসে। আমি কোন তদবিরকারীকে প্রশ্রয় না দেয়ায় আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিলেন আমার উপর। সর্বশেষ শনিবার রেজিস্ট্রেশনবিহীন সংগঠনের নামে বন্যার্তদের সহযোগিতার অজুহাতে কালেকশনকৃত নগদ অর্থ নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে পেরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সরকারি ফান্ডে জমা দিতে বলি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক স্বৈরাচারের দোসরদের উস্কানিতে আমার অনুপস্থিতিতে বসতবাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান শিমুল জানান, এক বছর হয়নি আমাদের জামায়াত সমর্থিত পায়রাবন্দ ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।সে হত্যার রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। আবারো আমাদের উপজেলার আরেক ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে বসতবাড়িতে হামলা চালানো হলো। আমরা বড় কোন দূর্ঘটনার পূর্বে এই অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কপিরাইট © ২০২৪ (দৈনিক পরিবেশ) সম্পাদক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Leave a Reply